সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

আমাদের জীবনকে সাদাসিধে করার সিদ্ধান্ত নিই

আমাদের জীবনকে সাদাসিধে করার সিদ্ধান্ত নিই

 মাদিয়ান ও মারসেলা কলোম্বিয়ার মেডলিন শহরে আরামে জীবন কাটাচ্ছিলেন। ভাই মাদিয়ানের একটা ভালো চাকরি ছিল এবং তারা খুবই সুন্দর একটা বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু পরে এমন কিছু ঘটেছিল, যে-কারণে তারা এটা চিন্তা করতে বাধ্য হয়েছিলেন যে, যিহোবার সেবক হিসেবে তারা কোন বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা বলেন, “২০০৬ সালে আমরা একটা বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলাম, যেটার বিষয় ছিল, ‘নিজের চোখকে সরল রাখুন।’ সেই সম্মেলনে বেশিরভাগ বক্তৃতাতে এই বিষয়টার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল যে, ঈশ্বরকে আরও বেশি করে সেবা করার জন্য আমাদের জীবনকে সাদাসিধে করতে হবে। আমরা যখন ফিরে এসেছিলাম, তখন বুঝতে পেরেছিলাম, সেখানে যে-বিষয়গুলো বলা হয়েছিল, আমরা সেটার ঠিক উলটোটাই করছি। আমরা যখন-তখন কেনাকাটা করতাম আর এই কারণে আমাদের কাঁধে ঋণের বোঝা চেপে গিয়েছিল।”

 এই সম্মেলন যেন মাদিয়ান ও মারসেলার ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিল। তারা নিজেদের জীবনকে সাদাসিধে করতে শুরু করেছিলেন। তারা বলেন, “আমরা আমাদের খরচ কমিয়ে দিয়েছিলাম, একটা ছোটো ঘরে গিয়ে থাকতে শুরু করেছিলাম, আমাদের চার চাকা গাড়ি বেচে দিয়েছিলাম এবং একটা স্কুটার কিনেছিলাম।” এ ছাড়া, তারা শপিং মলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন, যাতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে না ফেলেন। তারা লোকদের বাইবেল থেকে শেখানোর জন্য আরও বেশি সময় দিয়েছিলেন। তারা সেই বন্ধুদের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে শুরু করেছিলেন, যারা বিশেষ অগ্রগামী a হিসেবে উদ্যোগের সঙ্গে যিহোবা ঈশ্বরের সেবা করছিল।

 কিছুসময় পর, মাদিয়ান ও মারসেলা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তারা একটা গ্রামে গিয়ে সেবা করবেন। সেখানে একটা ছোটো মণ্ডলী ছিল, যেখানে আরও বেশি প্রকাশকের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু, সেখানে যাওয়ার জন্য মাদিয়ানকে তার চাকরি ছাড়তে হয়েছিল। তিনি যখন বসকে তা জানিয়েছিলেন, তখন বসের মনে হয়েছিল, মাদিয়ান পাগল হয়ে গিয়েছেন। তাই, মাদিয়ান তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আপনি তো অনেক টাকা রোজগার করেন, এতে আপনি কি সত্যিই খুশি?” বস বলেন যে, তিনি খুশি নন। তার জীবনে এমন অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো সমাধান করার উপায় তার কাছে নেই। এরপর মাদিয়ান তাকে বলেন, “এর মানে, আপনি কত টাকা রোজগার করেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং কোন বিষয়টা থেকে আপনি সবচেয়ে বেশি আনন্দ লাভ করেন, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমি এবং আমার স্ত্রী লোকদের ঈশ্বর সম্বন্ধে জানিয়ে আনন্দ লাভ করি। তাই, আমরা দু-জনেই এই কাজে আরও বেশি সময় দিতে চাই, যাতে আমরা সবসময় আনন্দে থাকতে পারি।”

 মাদিয়ান ও মারসেলা এমন লক্ষ্য রেখেছিলেন, যাতে তারা আরও বেশি ঈশ্বরের সেবা করতে পারেন। এটা করে তারা অনেক আনন্দ লাভ করেছেন। গত ১৩ বছরে তারা উত্তর পশ্চিম কলোম্বিয়াতে এমন অনেক মণ্ডলীতে সেবা করেছেন, যেখানে বেশি প্রকাশকের প্রয়োজন রয়েছে। বর্তমানে, তারা বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছেন।

a বিশেষ অগ্রগামীদের যিহোবার সাক্ষিদের শাখা অফিস নিযুক্ত করে। তারা আলাদা আলাদা জায়গায় গিয়ে পূর্ণসময় সুসমাচার জানানোর কাজ করে। তাদের প্রতি মাসে কিছু টাকা দেওয়া হয়, যাতে তারা নিজেদের খরচ মেটাতে পারে।