সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য

বাপ্তিস্মের পর আমাকে কী করতে হবে?—ভাগ ১: উপাসনার সঙ্গে যুক্ত কাজগুলোতে ব্যস্ত থাকো

বাপ্তিস্মের পর আমাকে কী করতে হবে?—ভাগ ১: উপাসনার সঙ্গে যুক্ত কাজগুলোতে ব্যস্ত থাকো

 আমাদের বাড়ি ও গাড়ির মতো মূল্যবান বিষয়গুলোর যত্ন নিতে হয়, যাতে সেগুলো ভালো অবস্থায় থাকে। একইভাবে, বাপ্তিস্মের পরও তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে যিহোবার সঙ্গে তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব থাকে। এরজন্য তুমি কী করতে পার?

এই প্রবন্ধে আমরা দেখব:

 ক্রমাগত ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে অধ্যয়ন করো

 মূল শাস্ত্রপদ: “তোমরা ভালো ভালো কাজ করে চল এবং ঈশ্বরের সঠিক জ্ঞানে বৃদ্ধি লাভ কর।”—কলসীয় ১:১০.

 এর মানে কী? বাপ্তিস্মের পর তোমাকে ক্রমাগত বাইবেল পড়তে হবে এবং সেটিতে লেখা কথাগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।—গীতসংহিতা ২৫:৪; ১১৯:৯৭.

 কী হতে পারে? কখনো কখনো হয়তো তোমার বাইবেল পড়তে ইচ্ছা করে না। তোমার হয়তো মনে হতে পারে যে, ‘কোনো কিছু পড়া আমার দ্বারা হবে না।’

 তুমি যা করতে পারো: বাইবেল থেকে তোমার পছন্দমতো কোনো একটা বিষয় বাছাই করো আর সেটা নিয়ে গবেষণা করো। এমন একটা তালিকা তৈরি করো, যেটা মেনে চলা তোমার জন্য সহজ হবে। প্রথম থেকেই ঠিক করে রাখো যে, কবে এবং কীভাবে অধ্যয়ন করবে। মনে রেখো, যিহোবা এবং বাইবেলের প্রতি তোমার ভালোবাসা বৃদ্ধি করার জন্য তুমি অধ্যয়ন করছ। এভাবে অধ্যয়ন করলে তুমি উপকার পাবে আর এতে অনেক আনন্দও পাবে।—গীতসংহিতা ১৬:১১.

 এটা করে দেখো: কোনো নিরিবিলি জায়গায় বসে অধ্যয়ন করো যেন তুমি পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পার। এভাবে তুমি ভালোভাবে অধ্যয়ন করতে পারবে আর অনেক কিছু শিখতে পারবে।

 তোমার কি আরও সাহায্যের প্রয়োজন?

 ক্রমাগত যিহোবার কাছে প্রার্থনা করো

 মূল শাস্ত্রপদ: “তোমরা কোনো বিষয়ে উদ্‌বিগ্ন হোয়ো না, বরং সমস্ত বিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা আর সেইসঙ্গে ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের অনুরোধ ঈশ্বরকে জানাও।”—ফিলিপীয় ৪:৬.

 এর মানে কী? ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের কথা বলা উচিত আর সেইসঙ্গে তাঁর কথা শোনাও উচিত। তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তুমি ঈশ্বরের কাছে নিজের কথা খুলে বল আর তুমি যখন বাইবেল পড়, তখন তুমি তাঁর কথা শোন। তুমি প্রার্থনায় যিহোবার কাছে সাহায্য চাইতে পারো আর তিনি যা যা আশীর্বাদ দেন, সেগুলোর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিতে পারো।

 কী হতে পারে? কখনো কখনো তুমি হয়তো মন থেকে প্রার্থনা কর না আর প্রতি বার প্রার্থনায় একই কথা বল। অথবা তুমি হয়তো মনে মনে চিন্তা করতে পার যে, ‘যিহোবা কি সত্যিই আমার প্রার্থনা শোনেন?’ বা এমন মনে হতে পারে যে, ‘তিনি অন্যদের প্রার্থনা শোনেন, তবে আমার প্রার্থনা কি শুনবেন?’—গীতসংহিতা ১০:১.

 তুমি যা করতে পারো: সারাদিন চিন্তা করো যে, তুমি কোন কোন বিষয়ে প্রার্থনা করতে পার। তোমার পরিস্থিতির কারণে তুমি যদি অনেক সময় ধরে প্রার্থনা করতে না পার, তা হলে মনে করে অন্য সময় অবশ্যই প্রার্থনা কোরো। শুধু নিজের জন্যই নয়, তবে অন্যদের জন্যও প্রার্থনা কোরো।—ফিলিপীয় ২:৪.

 এটা করে দেখো: তোমার যদি মনে হয়, তুমি মন থেকে প্রার্থনা করতে পারছ না আর একই কথা বার বার বলছ, তা হলে এই বিষয়টা যিহোবাকে বলো। তিনি সেই সমস্ত কিছু শুনতে চান, যেগুলো তোমাকে উদ্‌বিগ্ন করে তোলে, এমনকী প্রার্থনার সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলোও।—১ যোহন ৫:১৪.

 তোমার কি আরও সাহায্যের প্রয়োজন?

 ক্রমাগত নিজের বিশ্বাস সম্বন্ধে অন্যদের বলো

 মূল শাস্ত্রপদ: “তোমার নিজের বিষয়ে এবং তোমার শিক্ষার বিষয়ে সাবধান থাকো। … তা করার মাধ্যমে তুমি নিজেকে এবং যারা তোমার শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দেয়, তাদের রক্ষা করবে।”—১ তীমথিয় ৪:১৬.

 এর মানে কী? তুমি যা বিশ্বাস কর, সেই বিষয়ে যখন অন্যদের বলবে, তখন তোমার বিশ্বাস মজবুত হবে। শুধু তা-ই নয়, তুমি তাদের এবং তোমার নিজের জীবনও রক্ষা করতে পারবে।

 কী হতে পারে? কখনো কখনো নিজের বিশ্বাস সম্বন্ধে অন্যদের বলতে তোমার হয়তো ভালো লাগে না অথবা এমনটা করতে তোমার ভয় লাগে, বিশেষ করে স্কুলে।

 তুমি যা করতে পারো: মনে স্থির করে নাও যে, তুমি ভয় কাটিয়ে উঠবে এবং ক্রমাগত সাক্ষ্য দেবে। প্রেরিত পৌলের কাছ থেকে শিখতে পারো। তিনি বলেছিলেন, “আমি যদি আমার ইচ্ছার বিপরীতেও [সুসমাচার ঘোষণা] করি, তবুও আমাকে আস্থা সহকারে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আমি তা করি।” (১ করিন্থীয় ৯:১৬, ১৭) কখনো কখনো পৌলেরও হয়তো সাক্ষ্য দেওয়া কঠিন বলে মনে হয়েছিল, কিন্তু তারপরও তিনি তা করেছিলেন কারণ তিনি তার কাজের গুরুত্ব সম্বন্ধে জানতেন।

 এটা করে দেখো: তোমার বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করে একজন দক্ষ প্রচারককে বাছাই করো, যিনি খুব ভালোভাবে প্রচার করতে পারেন। তিনি তোমাকে সাহায্য করতে পারেন এবং সেইসঙ্গে পরামর্শ দিতে পারেন।—হিতোপদেশ ২৭:১৭.

 তোমার কি আরও সাহায্যের প্রয়োজন?

 ক্রমাগত সভাগুলোতে যোগ দাও

 মূল শাস্ত্রপদ: “এসো, আমরা একে অন্যের প্রতি মনোযোগ দিই, যাতে প্রেম দেখানোর এবং উত্তম কাজ করার ব্যাপারে পরস্পরকে উদ্দীপিত করতে পারি আর সেইসঙ্গে সভায় একত্রে মিলিত হওয়া বাদ না দিই।”—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.

 এর মানে কী? সভাগুলোতে যাওয়ার সবচেয়ে বড়ো কারণ হল যিহোবার উপাসনা করা। তবে, সভাগুলোতে যাওয়ার দুটো উপকারিতা রয়েছে। প্রথমত, ভাই-বোনদের সঙ্গে মেলামেশা করলে তুমি উৎসাহিত হবে। দ্বিতীয়ত, তুমি যখন সভাগুলোতে যাবে এবং অংশ নেবে, তখন অন্যেরাও তোমাকে দেখে উৎসাহিত হবে।—রোমীয় ১:১১, ১২.

 কী হতে পারে? কখনো কখনো সভা চলাকালীন তুমি বিক্ষিপ্ত হতে পার এবং অন্যান্য বিষয়ে চিন্তা করতে পার। এর ফলে, সভায় বলা ভালো বিষয়গুলো থেকে তুমি বঞ্চিত হতে পার অথবা তোমার হয়তো মনে হতে পারে যে, ‘এক-দু বার সভায় না গেলে কোনো সমস্যা নেই।’ আবার হয়তো স্কুলের হোমওয়ার্ক এবং অন্যান্য কাজের কারণে তুমি সভায় যেতে পার না।

 তুমি যা করতে পারো: স্কুলের পড়াশোনা গুরুত্বপূর্ণ, তবে সভাগুলোতে যোগ দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। তাই লক্ষ্য রাখো যে, তুমি একটাও সভা বাদ দেবে না এবং প্রতিটা সভা থেকে যতটা সম্ভব শিখবে। সভাগুলোতে অংশ নাও এবং হাত তুলে উত্তর দাও। সভার পর অন্ততপক্ষে একজন ভাই বা বোনের প্রশংসা করো, যার উত্তর বা সভার অংশ তোমার ভালো লেগেছে।

 এটা করে দেখো: সভাগুলোর জন্য আগে থেকে ভালো করে প্রস্তুতি নাও। প্রস্তুতির জন্য JW লাইব্রেরি অ্যাপ ডাউনলোড করো এবং ভিতরে “সভা” (“Meetings”) অংশে যাও।

 তোমার কি আরও সাহায্যের প্রয়োজন?