করিন্থীয়দের প্রতি প্রথম চিঠি ১১:১-৩৪

  • “আমার অনুকারী হও” ()

  • মস্তকপদ এবং মাথা আবৃত রাখা (২-১৬)

  • প্রভুর সান্ধ্যভোজ পালন করা (১৭-৩৪)

১১  আমি যেমন খ্রিস্টের অনুকারী, তেমনই তোমরাও আমার অনুকারী হও। ২  আমি তোমাদের প্রশংসা করি, কারণ তোমরা সমস্ত বিষয়ে সবসময় আমাকে স্মরণ করে থাক এবং আমি তোমাদের যা যা শিক্ষা দিয়েছি, সেগুলোর সমস্তই পালন করে থাক। ৩  কিন্তু, আমি চাই যেন তোমরা জান যে, প্রত্যেক পুরুষের মস্তক খ্রিস্ট; একজন নারীর মস্তক পুরুষ; আর খ্রিস্টের মস্তক ঈশ্বর। ৪  যদি কোনো পুরুষ মাথা আবৃত রেখে প্রার্থনা করে কিংবা ভবিষ্যদ্‌বাণী বলে, তা হলে সে নিজের মস্তকের অপমান করে; ৫  কিন্তু, যদি কোনো নারী মাথা অনাবৃত রেখে প্রার্থনা করে কিংবা ভবিষ্যদ্‌বাণী বলে, তা হলে সে নিজের মস্তকের অপমান করে, কারণ সে মাথা মুণ্ডন-করা নারীর মতো হয়ে পড়ে। ৬  কারণ একজন নারী যদি মাথা আবৃত না রাখে, তা হলে তার চুল ছোটো করে কেটে ফেলা উচিত; কিন্তু চুল ছোটো করে কেটে ফেলা কিংবা মাথা মুণ্ডন করা যদি একজন নারীর পক্ষে লজ্জার বিষয় হয়, তা হলে তার মাথা আবৃত রাখা উচিত। ৭  একজন পুরুষের নিজের মাথা আবৃত রাখা উচিত নয়, কারণ সে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি ও গৌরব, কিন্তু নারী পুরুষের গৌরব। ৮  ঈশ্বর পুরুষকে নারীর দেহ থেকে সৃষ্টি করেননি, বরং নারীকে পুরুষের দেহ থেকে সৃষ্টি করেছেন। ৯  আর পুরুষকে নারীর জন্য সৃষ্টি করা হয়নি, বরং নারীকে পুরুষের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। ১০  এই কারণে এবং স্বর্গদূতদের জন্য একজন নারীর নিজের মাথায় কর্তৃত্বের প্রতি বশীভূত হওয়ার এক চিহ্ন রাখা উচিত। ১১  তা সত্ত্বেও, প্রভুর অনুসারীদের মধ্যে পুরুষ ছাড়া নারী অস্তিত্বে থাকতে পারে না, আবার নারী ছাড়া পুরুষ অস্তিত্বে থাকতে পারে না। ১২  কারণ ঠিক যেমন নারীকে পুরুষের দেহ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে, তেমনই নারীর মধ্য দিয়ে পুরুষের জন্ম হয়; কিন্তু সমস্ত কিছু ঈশ্বরই সৃষ্টি করেছেন। ১৩  তোমরা নিজেরাই বিচার করো: একজন নারীর পক্ষে মাথা অনাবৃত রেখে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা কি উপযুক্ত? ১৪  এটাই কি স্বাভাবিক নয় যে, একজন পুরুষ যদি লম্বা চুল রাখে, তা হলে সেটা তার পক্ষে অসম্মানের বিষয়, ১৫  কিন্তু একজন নারী যদি লম্বা চুল রাখে, তা হলে সেটা তার পক্ষে গৌরবের বিষয়? কারণ সেই চুল তাকে আবরণের পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে। ১৬  কিন্তু, কেউ যদি অন্যান্য প্রথা নিয়ে তর্ক করতে চায়, তা হলে তাকে তোমাদের বলতে হবে যে, আমাদের কিংবা ঈশ্বরের মণ্ডলীর মধ্যে অন্য কোনো প্রথা নেই। ১৭  তবে, এই নির্দেশনাগুলো দেওয়ার সময় আমি তোমাদের প্রশংসা করি না, কারণ তোমরা যখন একত্রে মিলিত হও, তখন উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়। ১৮  প্রথমত, আমি শুনেছি, তোমরা যখন মণ্ডলীতে মিলিত হও, তখন তোমাদের মধ্যে মতভেদ হয়ে থাকে; আর আমি কিছুটা হলেও তা বিশ্বাস করি। ১৯  কারণ কোনো সন্দেহ নেই, তোমাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। আর এটা প্রকাশ করে দেবে যে, কার উপর ঈশ্বরের অনুমোদন রয়েছে। ২০  তোমরা যখন প্রভুর সান্ধ্যভোজ খাওয়ার জন্য একত্রিত হও, তখন তোমরা তা সঠিক উপায়ে খাও না। ২১  কারণ তোমরা যেহেতু তোমাদের রাতের খাবার আগেই খেয়ে থাক, তাই প্রভুর সান্ধ্যভোজ খাওয়ার সময় তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ হয় ক্ষুধার্ত থাকে, নাহয় মাতাল হয়ে থাকে। ২২  খাওয়া-দাওয়া করার জন্য কি তোমাদের বাড়ি নেই? না কি তোমরা ঈশ্বরের মণ্ডলীকে তুচ্ছ করছ এবং যাদের কিছুই নেই, তাদের লজ্জায় ফেলছ? আমি তোমাদের কী বলব? আমি কি তোমাদের প্রশংসা করব? কখনোই না। ২৩  কারণ আমি প্রভুর কাছ থেকে যা পেয়েছি, তা তোমাদের শিখিয়েছি আর সেটা হল, যে-রাতে প্রভু যিশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছিল, সেই রাতে তিনি একটা রুটি নিলেন ২৪  আর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে সেটা ভাঙলেন এবং বললেন: “এটা আমার দেহকে চিত্রিত করে, যা তোমাদের জন্য দেওয়া হবে। আমার স্মরণে এটা কোরো।” ২৫  নিস্তারপর্বের ভোজ শেষ করার পর একইভাবে তিনি একটা পেয়ালা নিলেন এবং বললেন: “এই পেয়ালা নতুন চুক্তিকে চিত্রিত করে, যা আমার রক্তের মাধ্যমে কার্যকর হবে। প্রতিবার তোমরা যখন এই পেয়ালা থেকে পান করবে, তখন আমার স্মরণে এটা কোরো।” ২৬  কারণ প্রতিবার তোমরা যখন এই রুটি খাও এবং এই পেয়ালা থেকে পান কর, তখন তোমরা প্রভুর মৃত্যু ঘোষণা কর আর তা সেই সময় পর্যন্ত, যতদিন তিনি না আসেন। ২৭  অতএব, যে-কেউ অযো­গ্য­ অব­স্থায় রুটি খায় কিংবা প্রভুর পেয়ালা থেকে পান করে, সে প্রভুর দেহ ও রক্তের বিরুদ্ধে পাপ করে। ২৮  রুটি খাওয়ার এবং পেয়ালা থেকে পান করার আগে একজন ব্যক্তি প্রথমে নিজেকে পরীক্ষা করে দেখুক যে, সে সেগুলো গ্রহণ করার যোগ্য কি না, তারপর সে সেগুলো গ্রহণ করুক। ২৯  কারণ দেহ কোন বিষয়কে চিত্রিত করে, তা না বুঝেই যে খায় এবং পান করে, সে নিজের বিরুদ্ধেই বিচার ডেকে আনে। ৩০  এই কারণে তোমাদের মধ্যে অনেকে দুর্বল ও অসুস্থ, আবার অনেকে মারা গিয়েছে।* ৩১  কিন্তু, আমরা নিজেরাই যদি পরীক্ষা করে দেখি, আমরা কেমন ব্যক্তি, তা হলে তো আমাদের বিচার করা হবে না। ৩২  কিন্তু, যখন আমাদের বিচার করা হয়, তখন আমরা যিহোবার* কাছ থেকে শাসন লাভ করি, যাতে এই জগতের সঙ্গে সঙ্গে আমরাও দোষী হয়ে না পড়ি। ৩৩  তাই, হে আমার ভাইয়েরা, তোমরা যখন এই ভোজ খাওয়ার জন্য একত্রিত হও, তখন একে অন্যের জন্য অপেক্ষা কোরো। ৩৪  কেউ যদি ক্ষুধার্ত হয়, তা হলে সে বাড়িতেই খাওয়া-দাওয়া করুক, এতে তোমরা যখন একত্রিত হবে, তখন তার বিচার করা হবে না। কিন্তু বাকি বিষয়গুলো, আমি যখন সেখানে যাব, তখন সমাধান করব।

পাদটীকাগুলো

এটা আক্ষরিক মৃত্যু সম্বন্ধে বলছে না, বরং এটা নির্দেশ করছে যে, তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছে।
শব্দকোষ দেখুন।