সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠ ২

ঈশ্বর কে?

ঈশ্বর কে?

১. কেন আমাদের ঈশ্বরকে উপাসনা করা উচিত?

সত্য ঈশ্বর হলেন সমস্তকিছুর সৃষ্টিকর্তা। তাঁর কোনো শুরুও নেই এবং তাঁর কোনো শেষও নেই। (গীতসংহিতা ৯০:২) তিনিই হলেন বাইবেলে প্রাপ্ত সমস্ত সুসমাচারের উৎস। (১ তীমথিয় ১:১১) যেহেতু ঈশ্বর আমাদের জীবন দান করেছেন, তাই আমাদের কেবল তাঁকেই উপাসনা করা উচিত।—পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ৪:১১.

২. ঈশ্বর আসলে কেমন?

কোনো মানুষই কখনো ঈশ্বরকে দেখেনি কারণ তিনি হলেন আত্মিক ব্যক্তি আর এর অর্থ হল, পৃথিবীতে বসবাসরত মাংসিক প্রাণী থেকে তাঁর জীবন আরও উন্নত প্রকৃতির। (যোহন ১:১৮; ৪:২৪) তবে, তাঁর সৃষ্ট বিষয়গুলো থেকে আমরা ঈশ্বরের ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে বুঝতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন ধরনের ফলমূল এবং ফুল আমাদেরকে তাঁর প্রেম ও প্রজ্ঞা সম্বন্ধে জানায়। নিখিলবিশ্বের বিশালতা আমাদেরকে তাঁর শক্তি সম্বন্ধে জানায়।—পড়ুন, রোমীয় ১:২০.

বাইবেল পাঠ করার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে এমনকী আরও বেশি জানতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, এটি আমাদের জানায় যে, ঈশ্বর কী পছন্দ করেন এবং কী অপছন্দ করেন, লোকেদের সঙ্গে তিনি কীভাবে আচরণ করেন আর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তিনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখান।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১০৩:৭-১০.

৩. ঈশ্বরের কি কোনো নাম আছে?

যিশু বলেছিলেন: “হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলিয়া মান্য হউক।” (মথি ৬:৯) যদিও ঈশ্বরের অনেক উপাধি রয়েছে, কিন্তু তাঁর কেবল একটিই নাম রয়েছে। প্রতিটা ভাষায় এটি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে উচ্চারণ করা হয়। বাংলাতে সাধারণত এটিকে “যিহোবা” বলে উচ্চারণ করা হয়।—পড়ুন, যাত্রাপুস্তক ৩:১৫.

অনেক বাইবেল থেকে ঈশ্বরের নাম সরিয়ে দিয়ে এর পরিবর্তে প্রভু বা ঈশ্বর উপাধি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, যখন বাইবেল লেখা হয়েছিল, তখন এতে প্রায় ৭,০০০ বারের মতো ঈশ্বরের নাম ছিল। যিশু যখন লোকেদেরকে ঈশ্বর সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়েছিলেন, তখন ঈশ্বরের নাম জানিয়েছিলেন।—পড়ুন, যোহন ১৭:২৬.

ঈশ্বরের কি কোনো নাম আছে? শিরোনামের ভিডিওটা দেখুন।

৪. ঈশ্বর কি আমাদের জন্য চিন্তা করেন?

এই প্রেমময় পিতার মতো ঈশ্বরও আমাদের দীর্ঘস্থায়ী মঙ্গলের জন্য কাজ করছেন

চারিদিকে ছেয়ে থাকা দুঃখকষ্টের অর্থ কি এই যে, যিহোবা হচ্ছেন এমন একজন ঈশ্বর, যিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন না? কিছু লোক দাবি করে, তিনি আমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য দুঃখকষ্ট ভোগ করতে দিয়েছেন, কিন্তু এটা সত্য নয়।—পড়ুন, যাকোব ১:১৩.

ঈশ্বর মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছা দিয়ে মর্যাদা প্রদান করেছেন। ঈশ্বরকে সেবা করার বিষয়টা বাছাই করার জন্য আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়েছেন বলে আমরা কি কৃতজ্ঞ নই? (যিহোশূয়ের পুস্তক ২৪:১৫) কিন্তু, অনেকে অন্যদের প্রতি খারাপ বিষয়গুলো করা বেছে নেয় আর এই কারণে লোকেরা দুঃখকষ্ট ভোগ করে থাকে। এই ধরনের অবিচার দেখে যিহোবা কষ্ট পান।—পড়ুন, আদিপুস্তক ৬:৫, ৬.

যিহোবা হচ্ছেন এমন একজন ঈশ্বর, যিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন। তিনি চান যেন আমরা জীবন উপভোগ করি। শীঘ্র, তিনি দুঃখকষ্ট এবং যাদের কারণে এগুলো ঘটে থাকে, তাদেরকে দূর করে দেবেন। সেই সময় না আসা পর্যন্ত, উত্তম কারণেই তিনি একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দুঃখকষ্ট থাকতে দিয়েছেন। পাঠ ৮-এ আমরা সেই কারণ সম্বন্ধে জানতে পারব।—পড়ুন, ২ পিতর ২:৯; ৩:৭, ১৩.

৫. কীভাবে আমরা ঈশ্বরের আরও নিকটবর্তী হতে পারি?

যিহোবা আমাদেরকে প্রার্থনায় তাঁর সঙ্গে কথা বলার মাধ্যমে তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি আলাদা আলাদভাবে আমাদের প্রত্যেকের ব্যাপারে আগ্রহী। (গীতসংহিতা ৬৫:২; ১৪৫:১৮) তিনি ক্ষমা করতে ইচ্ছুক। এমনকী মাঝে মাঝে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও, আমরা যখন তাঁকে খুশি করার চেষ্টা করি, তখন তিনি তা লক্ষ করেন। তাই, আমাদের অসিদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা প্রকৃতই ঈশ্বরের সঙ্গে এক নিকট সম্পর্ক উপভোগ করতে পারি।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১০৩:১২-১৪; যাকোব ৪:৮.

যেহেতু যিহোবা আমাদের জীবন দান করেছেন, তাই অন্য যে-কারো চেয়ে তাঁকেই আমাদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা উচিত। (মার্ক ১২:৩০) তাঁর সম্বন্ধে আরও বেশি জানার এবং তিনি যা চান, তা করার মাধ্যমে আপনি যখন ঈশ্বরের প্রতি আপনার ভালোবাসা প্রকাশ করবেন, তখন আপনি তাঁর আরও নিকটবর্তী হতে পারবেন।—পড়ুন, ১ তীমথিয় ২:৪; ১ যোহন ৫:৩.