জেগে থাকুন!
যুদ্ধে কি শুধু কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে, না কি আরও কিছু?
যুদ্ধে প্রচুর টাকা ব্যয় করা হয়।
“গত বছর সারা পৃথিবীতে যুদ্ধের খাতে ২.২ লক্ষ কোটি ডলার ব্যয় করা হয়েছে, যেটা এই পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড।”—দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪.
যুদ্ধে যে শুধু কোটি কোটি টাকাই ব্যয় হচ্ছে এমন নয়, এতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হচ্ছে। ইউক্রেনের যুদ্ধের কথাই চিন্তা করুন।
সৈনিক। কিছু বিশেষজ্ঞ অনুমান করেন, বিগত দু-বছরে, যখন থেকে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তখন থেকে প্রায় ৫,০০,০০০ সৈনিক আহত হয়েছে কিংবা মারা গিয়েছে।
সাধারণ মানুষ। ইউনাইটেড নেশন্স-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, যুদ্ধে ২৮,০০০-এরও বেশি লোক আহত হয়েছে কিংবা মারা গিয়েছে। কিন্তু ইউ. এন-এর একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারীর মতে, “এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের ফলে কত সাধারণ লোকের জীবন যে ছারখার হয়ে গিয়েছে, সেটার হিসাব করা অসম্ভব।” a
সারা পৃথিবীতে যুদ্ধ ও লড়াইয়ের ফলে মানুষকে প্রচুর কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে আর তাদের অনেক মাশুলও দিতে হচ্ছে।
১১ কোটি ৪০ লক্ষ। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পৃথিবীব্যাপী এত সংখ্যক লোককে যুদ্ধ ও দৌরাত্ম্যের কারণে নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় গিয়ে থাকতে হচ্ছিল।
৭৮ কোটি ৩০ লক্ষ। খাবারের অভাবে এত সংখ্যক লোককে কষ্ট পেতে হচ্ছে। এই বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম জানায়, “এখনও পর্যন্ত খাদ্যাভাবের মূল কারণ হল সংঘর্ষ। আর পৃথিবীব্যাপী খাদ্যের অভাবে ভুগছে এমন লোকদের মধ্যে ৭০ শতাংশ লোক সেই জায়গায় থাকে, যেখানে যুদ্ধ ও দৌরাত্ম্য চলছে।”
যুদ্ধ কি কখনো শেষ হবে? কখনো কি শান্তি আসবে? এমন সময় কি কখনো আসবে, যখন কেউ দরিদ্র থাকবে না আর সকলের কাছে যথেষ্ট খাবার থাকবে? বাইবেল এই বিষয়ে কী বলে?
যুদ্ধের এক সময়
বাইবেলে আগে থেকেই বলা ছিল, সারা পৃথিবীতে যুদ্ধে হবে। এটা বোঝাতে গিয়ে সেখানে এমন একজন ব্যক্তির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, যে একটা ঘোড়ার উপর বসে রয়েছে।
“এরপর আরেকটা ঘোড়া বেরিয়ে এল, যেটার রং আগুনের মতো লাল এবং যে সেটার উপর বসে আছে, তাকে পৃথিবী থেকে শান্তি কেড়ে নেওয়ার অধিকার দেওয়া হল, যাতে লোকেরা একে অপরকে হত্যা করে। আর তাকে একটা বড়ো খড়্গ দেওয়া হল।”—প্রকাশিত বাক্য ৬:৪.
ঘোড়ায় চড়া এই রূপক ব্যক্তির পিছনে আরও দু-জন ঘোড়ায় চড়া ব্যক্তি রয়েছে, যাদের মধ্যে একজন পৃথিবীব্যাপী দুর্ভিক্ষকে বোঝায় আর আরেক জন মহামারি অথবা অন্যান্য কারণে ঘটা মৃত্যুকে বোঝায়। (প্রকাশিত বাক্য ৬:৫-৮) বাইবেলের এই ভবিষ্যদ্বাণী সম্বন্ধে এবং কীভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, আমাদের দিনে এটা পরিপূর্ণ হচ্ছে, তা জানার জন্য “চার জন অশ্বারোহী—তারা কারা?” শিরোনামের প্রবন্ধটা পড়ুন।
শান্তির এক সময়
খুব তাড়াতাড়ি এমন এক সময় আসতে চলেছে, যখন যুদ্ধ হবে না আর তাই এর জন্য কোটি কোটি টাকাও ব্যয় করতে হবে না। তবে, এটা মানুষের প্রচেষ্টায় আসবে না। বাইবেল আমাদের জানায়:
ঈশ্বর ‘সারা পৃথিবীতে যুদ্ধ শেষ করে দেবেন।’—গীতসংহিতা ৪৬:৯.
ঈশ্বর সেই সমস্ত কষ্ট দূর করে দেবেন, যেগুলো মানুষ যুদ্ধের কারণে ভোগ করছে। “তিনি তাদের চোখের সমস্ত জল মুছে দেবেন এবং মৃত্যু আর থাকবে না; শোক বা আর্তনাদ বা ব্যথা আর থাকবে না। আগের বিষয়গুলো শেষ হয়ে গিয়েছে।”—প্রকাশিত বাক্য ২১:৪.
ঈশ্বর এমন এক পরিস্থিতি আনবেন, যেখানে মানুষ চিরকাল ধরে শান্তিতে বাস করবে। “আমার প্রজাগণ শান্তির আশ্রমে, নিঃশঙ্কতার আবাসে ও নিশ্চিন্ততার বিশ্রাম-স্থানে বাস করিবে।”—যিশাইয় ৩২:১৮.
বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, আমরা এখন যে-যুদ্ধ এবং অন্যান্য ঘটনা দেখতে পাচ্ছি, তা ইঙ্গিত দেয়, আমরা খুব তাড়াতাড়ি শান্তির সময় দেখতে পাব।
কীভাবে ঈশ্বর আমাদের জন্য সেই শান্তি নিয়ে আসবেন? তিনি তাঁর রাজ্য অর্থাৎ তাঁর স্বর্গীয় সরকারের মাধ্যমে তা নিয়ে আসবেন। (মথি ৬:১০) কিন্তু আপনি হয়তো ভাবছেন, এই রাজ্য আসলে কী আর তা আমার জন্য কোন কোন আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। এর উত্তর জানার জন্য ঈশ্বরের রাজ্য কী? শিরোনামের ভিডিওটা দেখুন।
a মিরোস্ল্যাভ জেনকা, ইউরোপের ইউনাইটেড নেশন্স-এর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল, ডিসেম্বর ৬, ২০২৩.